Sunday, December 7, 2014

পশমের সেই ভাঁজে একের আরেকের কারুসাজে লুকিয়ে থাকা দানারা জড়তার আব্বুলিশ মেখে গহনে ভেড়ে, চামড়ার উপরিস্তরে ভীতির আর্দ্র হিম ও সঙ্কোচে কেঁপে ধরা দেয় না তাই অসহায় অঙ্গুলিসঞ্চারে হারিয়ে ফেলা, আবার, জোড়ায় জুড়ে থাকা খসখসে মোমগুঁড়ো। আমার আঙ্গুলের মাথা যতটুকু প্রশ্বাসে ঐ শহরের মানচিত্র ও নালিনালা, মানুষের গতিপথ ও কালের সজীব স্বচ্ছতোয়া শিখে নিচ্ছে, ঘাম, যা কি না জলের অনুভূতি, আমার আলতো আঙ্গুলের বর্ণচোরা গলে জড়িয়ে তন্তু বিস্তার করে অসম্ভব শীতল হয়ে আসাটায়। কিছুকালের সেই অসঙ্গতি, প্রান্তের লাল বা ফিকে বাদামি জলাধারের পথ, আলগা বিসম্বাদের কাঁটা শিউরে খানিক দমে যায়। পাহারিয়া টিলায় উচ্চতার মাপ কেটে কেয়ারি সবুজতায় আবাদি। উড়োজাহাজের হাজার ত্রহ্যস্পর্শে চুম্বক পেয়ে ঘুরে গেছে চাকা। এঁকেবেঁকে দিব্য হেরে যাওয়া বৃত্তের স্বাধীনতায়। অথবা মাতালের আধোব্যাঞ্জনা। অস্ফুট বা বদ্ধ অধরের আচমক উচ্চারণে যত ধ্বনি ফেটে নক্ষত্র বা নভোনীলে কেটে যায় ধুসর শলাকা, তেমনই মিহি রেখাসম্পাত। সেই শহরের সারেঙ্গিসুর মধুছায়া শতদীপে উজ্জ্বল, কিছু মোহনায় ঘোলাটে ছিপ বুদ্বুদে রাজরশ্মির উদ্দমতায় কি নিন্দা, বা স্রোতসঙ্গমের উথালিপাতাল। এ শতাব্দীতে গোলাপির রহস্য থেকে যাবে, কঠিন নির্গন্তব্য সে দোহারের দোপাটি। ছিন্নমূল রেলগাড়ির আজান প্রাণ ছোঁওয়ায় একাগ্র চাষি সিড়িঙ্গে একবগগা তালের ঝাড়ে মাঠময় তবু দ্যুতি উথলিয়ে আঁচড় এলোমেলো খেলে না পাকা ধানের বা জলডিঙ্গির গাঢ় জলে। যেতে পারত, মন চায় যেরূপ, ঘাট অথবা পিলসুজের ক্রোশে, লাইন পাতা তার দিক থেকে ধুসরে। নিশ্চয়ই সেখানে শামুকের তাচ্ছিল্যে, সময় থামে, আর খসে পরে তার বহু জারিজুড়ো। সেই শহরের হিমজিজ্ঞাসায় শতাধিক রক্তপ্লাবন আসে, তবু দম না ভেঙ্গে বিন্দুর স্বেদুক্তি দিয়ে অবর্ণনীয় ঘূর্ণনের আস্ফলন। ছি স্নায়ুর ইতরামি, কোথায় লুকিয়ে আধোঘুমের উপশিরা, হয়তো বা জেগে আছে, কাতর লালিত্যে। সে শহর গুতিয়ে নেয় সব মহড়া, ঝাঁপ ফ্যালে সব আয়োজন ও মিশিয়ে যায়। আত্মলাজে হতবাক চমকে জাগে, রক্তে আসা যাওয়ার মাঝে যে বক্র হাহাকারের শুকতারায়  জলছাপ, একটা হাত আরেকটা হাত রোষে ধরার পিঠোপিঠি নকশায়, স্মরণে ও স্পর্শে, এক শীতের নির্বিকল্প শুষ্কতায় সে যে বড় জটিল এক অসুখ।          

No comments:

Post a Comment

Your Thoughts ...