Friday, December 20, 2013

আদিম প্রলোভন ও স্বাদসন্তুষ্টি

বেনে সমাজের সো কলড পরিশিলিত হিঁদু আচার নীতি অ্যান্ড অল দ্যাট সবই ভালো, পৌষে মঙ্গলবার, নোতুন গুড়ের নিয়মমাফিক বার্ষিক ঢেঁকুর, মাঘ ধানের অনপনেয় গেরো দরজার হাতলে, পরেরবারের পিঠেটা যেন ভালই হয়, লক্ষ্মী লক্ষ্মী, এখন অবশ্য 'ধুত্তোর সর্ষের তেলের দামটা পজ্জন্ত কমাতে পারল না, ক্যানই যে ভোট দিলুম' টেনে মাফলারটা দু'পোঁচ টান। মিঠের মিঠে মুগডালে হাসিখুশি তাজা মটর ও ভারিক্কি কুছ ফুলকপি ( বিভূঁইয়ে গোবি কয়, আমাদের মতো ধ্যাস্টামো না করে মানানসই নাম যে ফেঁদেছে তা বটে) দিয়ে যে জেন অস্টেন ন্যায় দাগাদাগা রোমান্স সৃষ্ট হয় তার জন্নে আলাদা উপন্যাস বরাদ্দ, আভি নেহি। বরং ব্রয়লারেও যে স্নেহের রাজপুত্তুরের আলসেমি ধরবে সেটির টের অন্দরমহল পাওয়া মাত্তই থানকুনি পাতা ও কাপালিক রক্ষাকবচ 'লাল মিরচি'টা সোঁদা দিয়েছিল, অষ্টমের দোকান থেকে মাসকাবারি বন্ধ বলে দিলুম' ওদিকে সমুহ পারিবারিক চিন্তাধারা টাল খেয়ে নষ্ট হয় দেবসেনাপতির দোরগোরায় - হেডআপিস এই হল শব্দছক ধরেছেন। অতএব খোকাবাবুর সমরাভিযান।

শীতকালের বাজারে কালিকা উপেক্ষা করে হন্টন দেওয়াটাও বিদারক। তবুও পঞ্চাশের নোট বাগিয়ে একটা মাংস, একটা চিংড়ি চাওয়ায় এ পেয়ার অফ ওয়াইজেন্ড আইজ 'এ কাঁহাক্কা বুরবক' নজরিয়ে পাওনা ফেরত দিলেন। কঠিন কলকাতা! সবসময় যে অরজিনাল পেঙ্গুইন বা ভিন্টেজ কেনা যাবে তা ক্যান, মাঝেসাঝে ইউ পি বি'র জাল দিয়ে মাছ তুলতে হয় যখন বেশিরভাগটাই আর এস কিনে শরীর সেঁকতে - সে যাকগে। কাজের জায়গায় কাজের বাত। উল্টোবাগে ধাবমান জনরাশির ২২৩ ধরতে দেখে পার্থিব আজুবার বেমালুম বিস্মরণের কথা ভেবে বেদনায়, যেমন ব্যাবিলন কেঁদেছিল, সামলে নিয়ে 'এই গলিটার শেষ প্রান্তে' শুনে হাল্কা হাওয়া - পেটটা ফাঁকা ঠেকছে, অন্ধকার আলোর অসমান ডুয়েল মাঝে ফাটা টায়ার ফাটা পাশবালিশ ফাটা বাদামপ্যাকেট টপকে ঘুপচি কোত্থেকে মবিলের ভারীঘ্রাণ 'তেরা দুনি ছাব্বিশ' বোরখাবদ্ধ সফিয়া লরেন ( আন্দাজই জীবনের উপজীব্য, বিশওয়াশ না হয় কামু খুলে মেলান) দোকানফিরতি হাংরি জেনারেশন যেন ফিয়ারস লেনেই উপড়েছে প্রায়। শ্বেতশুভ্র ল্যসী ১৫, তো দাঁইকরা ঝিকিমিকি গাজরের হালুয়া প্রবল রেজোলিউশনকে ফিকেতর তুলেছে - বাট মহম্মদ শ্যাল পারসিভিয়ার। অতএব টহল দিয়ে এলাকা সসম্ভ্রমে পরিদর্শন ও নিহারি- বিফ বিরিয়ানি-আদ্রাক চা-ফিরনি-তদ্দর্শনে ক্ষুদা খোদার কসম খেল। 

স্মর্তব্যঃ শিবসান্নিধ্যলাভ বজ্রকঠিন অমরনাথ পথেই, এবং কর্পোরেশনের দুর্দমগতির মেকানিকগণ অন্যথা ভাবেন না। একফালি রাস্তা নিজস্ব রন্ধ্র খুলে ডাই করে ১৮৬০এর সুয়েজ প্রণালী প্লাস ইট লক্কর পিত্ত বেয়াড়া প্লাস্টিক কংক্রিট স্ল্যাব ওপারে দুপাটি চটি ছেড়ে রাখা। প্রণম্য, কোবাল্ট ব্লু'তে লেখা বড়বড়, নামের স্পেসটাই দেড়জন আড়াআড়ি জায়গা, বাদবাকি আধা মালিক ও সহকারি। শিকে কয়েকজন অপেক্ষা করছিল বটে, তাই শালপাতার ডালায় পেসাদ গ্রহন করলুম, নিমিত্ত বাক্যব্যায়ে। সালাউদ্দিন চাচাও গম্ভীর, গামলায় অপেক্ষামান ওহ-সো-ফাইন বিফ ভুনা রাজকীয় কিছু সেন্ট মশলা মিক্সিয়ে তৈয়ের, মুঠো মুঠো ডেলায় শিকে বিঁধছে ও রুটিনবৎ ঝলসাচ্ছে। এইচ এম টি হাতঘড়িও খাচ্ছে, আর সুতোর পাক পাচ্ছে অগ্নিদগ্ধের পূর্বে। মানে এটাই তো! ঔপনিবেশিক এই ভাবকালে মুখে গলে যায়ে বলতে আমরা পক্কনিতম্বেরা পাখিপড়েছি বাটার, তাই এই অ্যামব্রোসিয়া যে মুখোগ্বহরে পল পল বিগলিত করুণা জাহ্নবী যমুনা, উইথ লঙ্কাকুচি পাতিনেবু টাকাটাকটাকনা। খিরি কাবাবটি লাপাতা ছিল; আর সুতো না জরালে ঝরে পরবে চিকি, এ রেগুলার শিক কাবাব নয়। বিলাসিতার আরেক নাম কাবাব ভক্ষণ, পুরাণেই লেখা আছে, তাই চাচার নিকট বটি'র দোরখোয়াস্ট পেশ করা হয়। পনেরো-দীর্ঘ-মিনিটের সময় চেয়ে অন্য গামলা বের করলেন - ইহায় গোস্তের নাজারা জমকালো, পরিমানে সীমিত, তাই পরীক্ষা প্রার্থনীয় (অন্তিমে সসন্মানে উত্তরণ, বাহুল্য, তবুও)। ছটু টেবিলফ্যান আঁচে তাকাত লাগাল, ফুটফাটছিটছাট কয়লার রোশনাইতে জমাট শিহরিত সরু ফালার মত বিলি কেটে যাচ্ছে, চাচার হাত অবিরাম কেয়ারসহ, বাদামি চমকানি। সালুবাবু বলে ডাকলে খচবেন এই ভেবে জড়িয়ে নিলুম, কিন্তু পাদধূলি প্রয়োজন। ভারিক্কি চর্বিসিক্ত মেগাস্বাদ ওমের সোহাগসমেত, সেই রুশ রুপকথার নির্মল ওয়াটারকালার বা দ্রাবিড়ীয় কভার ড্রাইভ বা অসহ্য প্রেমছোঁওয়া, যে যেমন পারে, কারণ হ্যাপিনেস কামস অ্যাট ২৫ (সুতা বা সুতলি কাবাব) অ্যান্ড ৩০ (বটি কাবাব)। অগ্নিস্নান পরবর্তী সুতো ছাড়ানো ও দাবীমতো 'পিয়াজ তা বেশি করে, নেবু না দিলেও চলবে'র রাখওয়ালা কোণায় ছোটে উস্তাদ, মাঝে আরেক বান্দা এসে আরেকটু টাইট দিয়ে গেল, ময়দার মতো, হাল্কা দলাইপেষাই, তবুও মখমল। চিরাচরিত এলিটিজমকে শুইয়ে দিতে পারে এমন (ও কি পাউরুটিতে লাগিয়ে খেতে হয় হে হে, বলে সন্দেহ ফাঁদলে কাঠঠোকরায় কামড়াবে) নাজাকাত কুছ অর হি, সালুবাবুর চোখে ক্লান্তি কেন, থাম্লে যে মানবসম্প্রদায়ের নুকসান সে বোঝার জন্যে  ফ্যান ক্লাব প্রয়োজন, এক্সটেনশন কর্ডে ঝুল, হাইজিন ভেবে পেছলে কি আর করবে খোদা।    


কলুটোলা হয়ে সর্পিল ফিয়ারস লেনে প্রায় অদৃশ্য, লিয়াকাত সুইটসের পাশেই আদামস কাবাব শপ। ধর্মের কলার তোলা আজকের মতো না হয় তাকে তোলা রইল, আরে, সেই ধর্ম, যেটা বলে কম পয়সায় তারিফযোগ্য খানা নাকি আজকাল মেলা ভার। ধুস!
  

No comments:

Post a Comment

Your Thoughts ...