Saturday, October 18, 2014

মিথ্যেমিথ্যে দুপুরগুলোকে নিজের মতো বড় বা ছোট করে নেওয়া। খুব ক্ষীণ কালোত্তীর্ণ রেডিওর দু'এক পশলা। বিত্তলব্ধ জাগতিক ঐশ্বর্যের সবকিছুই আছে এদিকওদিক। হাতের মুঠোয়, সাধ্যের মধ্যে। তবুও সাড়ে দশটার পড়েই যেন দীর্ঘতর হয়ে ওঠে ছায়া। ঘেমে ওঠা কাঠের কারুকাজ ডিভান ও শ্বেতপাথরে অবসন্ন কত শৌখিনের জরি ফিকে লাগে। ফিকে লাগে। সুইচ-অনের নব ঘোরাতেই শব্দের কর্কশ নিমেষের গাম্ভীর্য তুলে দিয়ে আবার তেলকালো পর্দা ফেরায়। 'নয়ন সরসী কেন'। রাধাচূড়ার হাল্কা নেশাদোলে ছন্দনাচ। আলো যাচ্ছে, আসছে - ঘনিয়ে, পিছু ফিরে। বারবার বিছানার চাদরের নকশায় ফেলে যাচ্ছে কি যেন, ছোট্ট পাখি চন্দনা ছটফটে খুঁজতে আসছে আবার। আর ধুলো ওড়ানো ন্যাকড়াও থমকে যাচ্ছে পোড়ামাটির ওপর। অস্পষ্ট নয়, লুকনোও ছিল না, তবুও কেন জানে বইয়ের শিরদাঁড়ার অক্ষরগুলো বহুদিনের প্রাচীন। বুক শেলফের কাছেই তো রোজ দাঁড়াই। বেশী বেলার ঠাকুরপুজোর পর তেতো হয়ে ওঠা চায়ে চুমুক দিয়ে মনে মনে গেঁথে নিচ্ছি কত না-কিছুকেই। বিজ্ঞাপনও দুপুরের সময়টা কম হয়ে আসে। কথা থাকে না। গান থাকে। ওরা বোধহয় ক্যাসেটেই চালায়। রোদে দেওয়া বালিশ, টিশার্ট, আদার টুকরো, জিরে গুড়ো। শিল কাটাই এখনও ডেকে গেল না। মেনিটাও না। দুপুরের খাওয়া শেষ না হলে পাত্রদের ঝগড়া থামবে না। তিনটের পর গোলাপি দেওয়াল হবে গাড় থমথমে, নেতিয়ে আসবে সজনেগাছের কিচিরমিচির। সগড়ির থালায় আঙ্গুল ডুবিয়ে ভাত শুকিয়ে খড়খড়ি হয়ে এল। দক্ষিণের ঘরটা মোছাতে হবে। অনিমা এখনও এল না কেন। এই একগাল ভাত খেয়ে নে, তারপর খেলিস সারা বিকেল। আগে দাও - কি জিজ্ঞেস করার আগেই গাল বাড়িয়ে কেড়ে নিয়েছে। কৃষিকথার আসর শুরু হবে। খুব দুষ্টু হয়েছে, জানো তো, ভীষণ, একটু বকে দাও না কেন। সূচসুতোর টিনটা যেন কোথায়। শ্যামলীরা কেমন আছে, শ্বাশত। কত স্তর ধুলোমাখার আগে, না? দোহাই, খেয়ে নে, লক্ষ্মীটি।                   

No comments:

Post a Comment

Your Thoughts ...