Sunday, September 21, 2014

বৃষ্টির কলতান

খানিক আগেও মনে হয়েছিল মোটামুটি তৃণভোজী ও পরমুখাপেক্ষী অচেনা বাকরুদ্ধ স্পষ্টত বক্র ও শিথিল, পড়ুয়া টেক্সটবুক তত্ত্ব পাতলা জং, খানিক আগেও মনে হয়েছিল অসহায় চিকেনখেকো ঘুমপালক বা ঝকঝকে অমাবস্যার নিশপলক বটের মতই স্থবির এবং হিসিসিক্ত তোষক, খানিক আগেও মনে হয়েছিল ডাগর ভুঁড়িতে রংচঙে বুদ্ধিমোড়ক আর নাছোড়বান্দা চোখ পিটপিট দ্যাখে কিন্তু কর্নিয়া হয়ে হৃদয়ে পৌঁছতে পারে না, জীবনকালাবধি তরঙ্গ পৌঁছতে হেব্বি ডিলে...

তবু আজ জোরসে বারিশ নামলো। এরকম বৃষ্টি হলে রাজপথে কোনোকিছু থাকেনা বিশেষ। ধুয়ে যায়, নালিনর্দমার মুখটা জ্যাম করে দেয়। পরে কিন্তু হাজারটা স্বস্তি বাঁড়া কেউ ঝাঁট দিচ্ছিল না, মেথরটাও উজবুক ল্যাদখোর আমার মলমূত্র আমিই সাফ করলে সিরিয়ালগুলো কি তোর শ্বশুর দেখবে। অনেকটা গরম গেছে, যখন খুব তেতে ছিল আর চাকাও আটকে হাঁসফাঁস কেলেঙ্কারি। তার আগে ভুল্ ভাল নুড়ি পাতা জমা হয়েছে কোনায়, ভিখারিটার কাঁথার চৌহদ্দিতে স্তরে স্তরে গন্ধগোকুল, এলোমেলো শামুক। এতসব কে সরাবে কেউ বলছিল না। হাল্কাফুল্কা গা কুটকুট করলে মলম লাগাচ্ছিল আর অ্যান্টেনার ওপারে মেলা শাড়ি আর জাঙ্গিয়ার ফাঁকফোকর দিয়ে নৈঋত দেখছিল আর বদহজম হলেও তড়পাচ্ছিল আর কইছিল ও তো পাঁচবছরে তিনদিন হওয়ারই আছে, কেন আবার সুচ ফুটিয়ে কষ তোলা। আমরাও গামছা পরে পান্তা আর ভোররাতে বিরিয়ানি উইথ মাঞ্ছুরিয়ান আর বাস্তুসাপকে বুকের দুধ। তারপর যেটা হল তা সারা বর্ষাকালেও, কি বলি, কস্মিনকালেও হানাময় ন্যাংটো ঢলঢলেগুলো ভেবে দ্যাখেনি। গাঁড় ফেটে শানদার টিকউডের দামাল দরজা মাইরি। সে কি ভুসভুস গন্ধ। নাদি আর টিকটিকির লেজ পুড়িয়ে তিনদিন চৌখুপ্পির মধ্যে ছিটকিনি দিয়ে রেখেছিল। দরজা খুলে মেঘগুলোকে শহরে স্বাগত জানাতেই ভেদবমির মত গল্ গল করে বাসি সবেদা আর লোকাল ক্লাবের চন্নমেত্ত আশটেপিষ্টে ঘুণপোকা ঘরময় ছিটকে থোকা থোকা পড়ল। কোন বাল পরিষ্কার করবে ওসব, শুনি? তাই বৃষ্টি এল। কি ঝমঝম রে বাবা, কি আওয়াজ, কি তেজ। প্রথমে ওপরের তপ্ত লেয়ারটায় ফুস ধোঁওয়া ওঠে, তারপর সেসব নিভে যায়। এলোমেলো প্রবাহিকা জড় হয়। অদের ধর্ম জানা আছে, ঠিক আবেগে আর যুক্তিতে মিশবে। আর ভাসিয়ে নিয়ে যাবে চৌবাচ্চার তেলাপিয়াদের, স্ট্রেট গঙ্গাসাগরে। আমাদের বিষনির্যাসগুলোও গুলে গেল। ফেনা ফেনা বুদবুদ পচা বাদামি। প্রচণ্ড চেপে হিসু পেয়েছিল যাদের, তারা মুখেই করে দিল, আর বেশি ভাবল না। যারা খাওয়ার হুশ হুশ করে টানল। ফিনকি দিয়ে গ্যাসোলিন বেরচ্ছিল, আটকাতেই পারছে না কেউ সেলোটেপ দিয়ে ফেবিকল দিয়ে খিস্তি দিয়ে ক্যাঁচ ক্যাঁচ করে যৌনাঙ্গ ফুঁড়ে। শীতঘরের কাঁচে থ্রু দিয়ে কিসসু দেখা যায় না, ওয়াইপার ও নেই যে মাজাকি চুষব তাই ওদের কোমোড আর কুশনে ডুমো ডুমো লালপিঁপড়ে আর নীলনেকরে আর সবুজচিতা আর ঘনশকুন র‍্যান্ডম ঠুকরে গেছে আর তাগাদা দিয়ে গেছে। বড় বড় হোতাদের মগজ কেটে বাদ দিয়ে ড্রামে রক্ত ভরেছিল। তা দিয়ে ভিক্টোরিয়া কেওরাতলা চিড়িয়াখানা একডালিয়া এভারগ্রিন মিউজিয়াম হাওড়াব্রিজ কলেজস্কুয়ার সিটিসেন্টার জগুবাবুর বাজার মাছেরভেরি ড্রয়িংরুম বেশ্যালয় শয্যাদৃশ্য লালবাড়ি সবুজবাড়ি কাঁটাপুকুর পাব্লিক উরিনাল সর্বত্র লিখল অগামার্কা আঁতেলচিন্তা। না কি, শরতের বজ্রনির্ঘোষ। তাও কি না কমদামি সস্তার রক্তে। ওসব তো কলঘরে জল কম পরলে ছোঁচাতে লাগে। তাও নাগরদোলায় চড়তে চড়তে অনেক্কিছু উড়ুক্কু হয়ে বৃষ্টিতে ধুয়ে গেল। আরশোলাদের মৃতদেহ জঙ্গম নাড়িভুঁড়ি বদবু ওক তোলা হেলাফেলাদের উচ্ছিষ্ট বহু অনাচারের বমি আর চিটচিটে ফেনা কৃমিদের শ্বাসনালী থকথকে পায়খানা ভর্তি ভর্তি রক্তপেচ্ছাপ হেরে যাওয়া শাসকতন্ত্র খাঁ খাঁ গুঠখার নামহীন ঔরস কুকুরদের ইঁদুরদের কাকদের ষাঁড়দের সাপেদের ব্যাঙ্গেদের পোঁদে লেগে থাকা শুকনো গু বছরকার আগের হলদেটে খোলস আর কাঠকয়লার শিরাশিরা দুয়েক পশলা অপরাধবোধ আর পাঁজরের কালো হয়ে আসা হাড় কিছুটা গা ঘিনিয়ে ওঠা গোলাপি মাসমজ্জা নরম রাং মাংসের মতই উরুর কাছটা কয়েকশো কালগোখরো ইস্তিরি করা স্বভাবদোষ দোনলা বিচারবানী রায়পত্র টাকনাদার পাঁঠার কষা দুর্দিনের মায়ের মুখের বাসি গন্ধ পেটফোলানো অবান্তর বেঁচেথাকা লাঠি এফিজি দম্ভ করালমুঠি নষ্ট হয়ে যাওয়া নারীশরীর নষ্ট হয়ে যাওয়া চাবুক ফেলনা পেটো আষাঢ়ে বেদমপ্রহার ক্যালানি মাজা ঘষে দেওয়া রগড়ানি আর ডলে দেওয়া পৈশাচিক লঙ্কাগুড়োয় ফুটন্ত তেল আর চড় খাওয়ার জন্যে সোজা থাকা আবার নুয়ে পরা আবার বাড়ি বয়ে আনা শাসানি শ্বাসরোধ শীতলঅস্তিত্ব এবং ওই যে বল্লুম হাজার হাজার স্কোয়ার ফুট জায়গা দখল করেও কুঁচকি কামড়ে অবান্তর বেঁচেথাকা আর বেঁচেই থাকা ...

এত জল রাখিস কোথায় শহর, এত কান্না তোর?  

No comments:

Post a Comment

Your Thoughts ...