আজ আবার অনেকক্ষণ বসে আমরা। উৎসের লেখা অনেকটাই হয়ে এসেছে, মনে হয়। কষে চেপে রাখা মুখটা ছোট্ট হয়ে গেছিল, বিবর্ণ ঘৃণা, কবিতা হয়ে বেরিয়ে শিথিল হচ্ছে স্বাভাবিক। ওর কোলে শুয়ে শঙ্খিনী সকাল দেখছে। হাল্কা নীল রঙের শাড়িটা পরে এসেছে। আমরা 'অস্তরাগ' নিয়ে আলোচনা করছিলাম। সুব্রত বিকানেরের কথা তুলল। আজীবন নতুন নকশা খুঁজে যাবে, যেমনটা বেখেয়ালে ভেবে রেখেছে। অবশ্য সাম্য যে ভুল ছিল ও কথা বলায়, তাতে সবাই একমত। বিলাসিতার প্রশ্নই বা আসে কোথা থেকে? যে অ্যাজেন্ডা নিয়ে শুরু হল কনভেনশন, তার বিরুদ্ধ স্রোতে সবাইকে টেনে নিয়ে চললে সমালোচনার মুখে পড়তে হবেই। এরই মধ্যে আন্দ্রেই বুরহানের প্রসঙ্গ ঢুকিয়ে দিল। যাকগে! ঝড়ের গতিতে শিলাদিত্য এল, হাতে একগাদা কদমফুলের থোকা। কার কত রোয়াব আছে যে ওকে টলায়? মনে মনে হাসি পায়, আবার মায়াও লাগে। বড় আদুরে হচ্ছে সন্ধের শব্দেরা। বেয়াদপ হাওয়াটাও পাগলামিতে সায় দেয় মাঝেসাঝে, যেমন এখন। কোন সন্ধ্যাই সঙ্গীতহীন হয় না। আজ বহুদূরে বাদামবিক্রেতা। নোনা চকচক করছে পিতলের পাত, কার আসা যাওয়ার পথে। কারোর স্বর বিড়বিড় করে যাচ্ছে অচেনা অক্ষরদল। কে গাইছে রে, আমি তো শুনছি না। আমার পদ্মপাতায় শিশিরের রামধনু নেই। কেন বলত? একদিন সত্যিই কোথাও চলে যাবো যেখানে দরবেশিরা ধুলো মেখে কাঁদে। আছড়ে পিছরে ধুলো খায় যন্ত্রণা। রাধার কি মুক্তি, না, মৃত্যুর শিহরনে মুক্তি। ওই যে শীত এল বলে, একবারটি তাকিয়েই দ্যাখ না, সন্দীপন।
Thursday, October 30, 2014
Saturday, October 25, 2014
আবার বিন্দু। পাঁচফোড়নের সাংঘাতিক। মাড়ির আড়ালে আনমনা রক্তচিনি। যে আলোয় নবীনারা চন্দ্রাহত হয়। জানলা খুলতেই নেমে আসে খড়গ। ছররা ছররা গুলি করে অসংখ্য। দেওয়ালে। বাঁশ বেয়ে নেমে আসে তড়িৎ। সাদা হিলহিলে সাপিনী। অসংখ্য কাঁটাতারের জিম্মেদারি। সঙ্ঘমিত্রা। তবে এখন নিশা। জলভাত খেয়ে ঘুমিয়েছে। তা'বলে কি কিছু বলবার নেই? কোনো মায়া নেই শাঁখায়, প্রেতিনী। আফিম। আধপুরানো চিতায় চন্দনক্লেশ। এই নির্ভার আমোদ। ছাইকলঙ্ক। তোমাকে লিখিয়ে নিচ্ছে কাঁপুনি। হিমশব্দেরা। অভিলাষ ফুলসাজিতে অক্ষর। কাঁচের গুড়োয় তারামুখর। বল, আর কি বা চাইতে পারে রাত্রি? জ্বরলাগা তীব্র অসুখ। জন্মাবধিকাল। কার কান্না জন্মায়। কার নখে আগলে থাকে আস্তিন। শুধু স্নিগ্ধ শোঁকে সুতীর্থ। এলাচগন্ধী কাজল। অদৃশ্য নেশামধুর। কাঁধ বেয়ে জিভে আসে ক্লান্তি। যে প্রেমে কদমের ফুল জন্মায়।
Saturday, October 18, 2014
মিথ্যেমিথ্যে দুপুরগুলোকে নিজের মতো বড় বা ছোট করে নেওয়া। খুব ক্ষীণ কালোত্তীর্ণ রেডিওর দু'এক পশলা। বিত্তলব্ধ জাগতিক ঐশ্বর্যের সবকিছুই আছে এদিকওদিক। হাতের মুঠোয়, সাধ্যের মধ্যে। তবুও সাড়ে দশটার পড়েই যেন দীর্ঘতর হয়ে ওঠে ছায়া। ঘেমে ওঠা কাঠের কারুকাজ ডিভান ও শ্বেতপাথরে অবসন্ন কত শৌখিনের জরি ফিকে লাগে। ফিকে লাগে। সুইচ-অনের নব ঘোরাতেই শব্দের কর্কশ নিমেষের গাম্ভীর্য তুলে দিয়ে আবার তেলকালো পর্দা ফেরায়। 'নয়ন সরসী কেন'। রাধাচূড়ার হাল্কা নেশাদোলে ছন্দনাচ। আলো যাচ্ছে, আসছে - ঘনিয়ে, পিছু ফিরে। বারবার বিছানার চাদরের নকশায় ফেলে যাচ্ছে কি যেন, ছোট্ট পাখি চন্দনা ছটফটে খুঁজতে আসছে আবার। আর ধুলো ওড়ানো ন্যাকড়াও থমকে যাচ্ছে পোড়ামাটির ওপর। অস্পষ্ট নয়, লুকনোও ছিল না, তবুও কেন জানে বইয়ের শিরদাঁড়ার অক্ষরগুলো বহুদিনের প্রাচীন। বুক শেলফের কাছেই তো রোজ দাঁড়াই। বেশী বেলার ঠাকুরপুজোর পর তেতো হয়ে ওঠা চায়ে চুমুক দিয়ে মনে মনে গেঁথে নিচ্ছি কত না-কিছুকেই। বিজ্ঞাপনও দুপুরের সময়টা কম হয়ে আসে। কথা থাকে না। গান থাকে। ওরা বোধহয় ক্যাসেটেই চালায়। রোদে দেওয়া বালিশ, টিশার্ট, আদার টুকরো, জিরে গুড়ো। শিল কাটাই এখনও ডেকে গেল না। মেনিটাও না। দুপুরের খাওয়া শেষ না হলে পাত্রদের ঝগড়া থামবে না। তিনটের পর গোলাপি দেওয়াল হবে গাড় থমথমে, নেতিয়ে আসবে সজনেগাছের কিচিরমিচির। সগড়ির থালায় আঙ্গুল ডুবিয়ে ভাত শুকিয়ে খড়খড়ি হয়ে এল। দক্ষিণের ঘরটা মোছাতে হবে। অনিমা এখনও এল না কেন। এই একগাল ভাত খেয়ে নে, তারপর খেলিস সারা বিকেল। আগে দাও - কি জিজ্ঞেস করার আগেই গাল বাড়িয়ে কেড়ে নিয়েছে। কৃষিকথার আসর শুরু হবে। খুব দুষ্টু হয়েছে, জানো তো, ভীষণ, একটু বকে দাও না কেন। সূচসুতোর টিনটা যেন কোথায়। শ্যামলীরা কেমন আছে, শ্বাশত। কত স্তর ধুলোমাখার আগে, না? দোহাই, খেয়ে নে, লক্ষ্মীটি।
Thursday, October 9, 2014
কত মলিনতায় কত রাজশিয়রে
ক্ষীণ রশ্মি দীপ জ্বলে ও নিভৃত শান্তনির্ঝরে, অচঞ্চল দিবারাত্রি
সে হিমনীল জাগ্রত, বিন্দুর জন্ম প্রতি আগুয়ান
স্তনপদ্মে, আদিম রক্তিম আভরণ
কে দিয়েছে তাকে এই ভ্রম কেন এই লিপির ধ্বনি হয়ে মধ্যরাতের ভিক্টোরিয়া
আর সকল অন্তরীক্ষের অবসানে
নিবিষ্ট মর্মরমূর্তি মৃত শুয়ে বসন্তবকুল ধোওয়া নাগরিক পিচরাস্তায়।।
_________
SG
Wednesday, October 8, 2014
বিভাজিকার মাঝে পুষে রাখা শহরের অনাদর
কারোর কামড়ে ধরার আকুতি
কারোর তীব্র শীত, খুলে ফেলে সব আবরণ
সুসজ্জিত বিছেহার চুনি সাজে আমোদে পরিহাস করে ধুলোসাফ তোরঙ্গে লালের দ্যুতিশরীর
আজও কেউ পাশ ফেরে আত্মজিজ্ঞাসায় ও উঠে পরে বারান্দায়, তারা শুয়ে, একলা চলাচল
অবসন্নের ঝঙ্কারে ঝরতে থাকা সব রূপ, মায়াপুরুষ, ছিঁড়ে যায় জোনাকি, জেগে ওঠা বরণডালা -
হাওয়া দেয়, পেখম মেলে আতরের গুড়ো মেখে কোন এক
অস্থির বিষণ্ণসুন্দরী কাঁদে।।
_________________
'The Real Dream' SG
Storm. Static. Sleep.
Storm. Static. Sleep.
Saturday, October 4, 2014
গত কিছুদিনের মুখরোচক হিন্দি-বাংলা মিলিয়ে মিশিয়ে সাঁজসভেরা পুজোর ঘ্রানকে জনমানসে জিইয়ে রেখেছিল। নোনাধরা আরডি, কিশোর, আশা, লতা, মান্না, বীরুভদ্র, স্ত্রোতপাঠ, 'জয় রামকি সীতাকি', লোপা ইত্যাদি ইত্যাদি। যখনই বাড়িতে শান্তিতে ঝিমবে, আলত জিরিয়ে নেবে অমনি মহানাদে। তবে ঘুম দেরিতে ভাঙলেও দশমীর সকালে চোখের পাতা খোলালো সেতারের শ্বাসপ্রশ্বাস নেওয়া মিহি জলস্তরের মতো, কোমল আলেখ্যে মৃদুমন্দ ছন্দ। প্রবলতায় এতটাই চাপা যে ফেরতা হাওয়ায় কুড়িয়ে-বাড়িয়ে পেতে হয় সে স্বাদ। মেঘলা সকাল ছিল, তবুও প্রতিটা আঘ্রাণে পুরবের পীতবর্ণ স্নিগ্ধতা। আঙ্গুলের ফাঁক দিয়ে গলে যাওয়া সূক্ষ্মতায় মনের অলিন্দে বসন্তবৌরী। নাছোড় আবেশধ্বনি। এই এক মূর্ছনায় লেখা কাব্যের সমস্ত আখ্যান। বার বার ফিরে আসছে। আদৌ আসছে কি? বর্ণে আগেরটা থেকে আর বেশী নবপথদিশারী। কোথাও এক দীপ্ত উন্মেষ ঘটে। বছরের জমা হাহুতাশ মিশে মিশে ধুয়ে যাচ্ছে। পরিস্রুত হওয়াটা তেলতেলে ঘিঞ্জি মোচ্ছবে হয় না। আলাদা পরিসর প্রয়োজন যখন দেবীবরণ সমাপ্ত, প্যান্ডেলও খোলা হবে প্রায়, হোল নাইট করে গেরস্তের নিশ্চিন্তের ঘুম। জানান দেয় সেইসব বিস্মিত শ্রোতাদের, এখনও জলের প্রতিচ্ছবিতে বিনীতারা কাজল পরে। প্রায়ান্ধকার ফুটপাতে বসে এখনও কেউ দু'দশটা বাস ও চলমান মৃতদেহদের বাড়ি ফিরতে দেখে। দাপুটে দেমাকি লীলাদের খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে খুঁজে যায় অস্ফুট হেরে যাওয়া অপুদের সারি। কারণ হেরে চলাটা নিয়মমাফিক। মাঝসমুদ্রে দাঁড়িয়ে চিৎকার করেও যে জট আরও ফেঁসে যায়। শরীরে অতো জলও নেই যে কোনও কান্না বেরবে। শিরা শুকিয়ে মিলিয়ে গেছে। যদি কিছু মণিমুক্ত পড়ে। আগে দৌড়ে পৌঁছতে পারা চাই। নাহলে বিষাদের এগরোল, হলুদ হয়ে আসা পেচ্ছাপ ও অবান্তর স্বমেহন। আজকাল খেলনার দোকান চোখে পড়ে না। ওর পাড়ায় ফি শনিবার ছবিওয়ালা আসে। আমাদের পাড়াটায় ছাপোষা বেশ্যালয়, কোনাঘুঁজিতে। পেটের দু'পাশেই ব্যথা হলে বুঝি মনখারাপ হয়েছে। তখন আর সেতার শোনা যায়না। এত গাছপালা, জমি বাড়ির মধ্যে দিয়ে শব্দ পৌছয়ে না বোধহয়। কে জানে,
Subscribe to:
Posts (Atom)