Sunday, September 27, 2015
তাকে যত তাড়াই দূরে দূরে
তবু সে আসে মেঘলা চোখে ঘুরে ফিরে
থাকি আমি ভয়েই দূরে দূরে
যদি সে গেয়ে ওঠে অন্য কোন সুরে
আজ কাল বা পরশু যদি সে এসে দাঁড়ায়
ছায়ার মত আমার ছায়ায়
ছায়ারও ছায়াতে সে অন্যজন
ভরদুপুরে একলারাতে অন্যমন
সে অবুঝ খেয়ালি, সে ভীষণ একাকী
আবেগ সবই তার তো ফাঁকি
এখনও ভাবে সে ফুটবে পলাশ
ডাকবে কোকিল বিছানায় সে ফিরবে পাশ
______________________________
Songs of the Loony | 1999
তবু সে আসে মেঘলা চোখে ঘুরে ফিরে
থাকি আমি ভয়েই দূরে দূরে
যদি সে গেয়ে ওঠে অন্য কোন সুরে
আজ কাল বা পরশু যদি সে এসে দাঁড়ায়
ছায়ার মত আমার ছায়ায়
ছায়ারও ছায়াতে সে অন্যজন
ভরদুপুরে একলারাতে অন্যমন
সে অবুঝ খেয়ালি, সে ভীষণ একাকী
আবেগ সবই তার তো ফাঁকি
এখনও ভাবে সে ফুটবে পলাশ
ডাকবে কোকিল বিছানায় সে ফিরবে পাশ
______________________________
Songs of the Loony | 1999
Wednesday, September 16, 2015
"সেই ঘোড়া আর তার আরোহী এখন এই শুন্য হাটের অলিতে-গলিতে ঘুরে বেড়ায়, যেন এখনো সেখানে হাট, যেন এখনো তাদের মানুষজন ঠেলে-ঠেলেই এগতে হচ্ছে। কিন্তু এখন আর অশ্বারোহী তার ভিক্ষার ঝুলি কাঠির ডগায় ঝুলিয়ে এগিয়ে দিচ্ছে না। এখন আর ঘোড়াটাকে পেছনে ধাক্কা খাওয়ায় চমকে উঠতে হয় না। আর অস্পষ্ট চাঁদনিতে সেই ঘোড়া আর অশ্বারোহী ঘুমুতে-ঘুমুতে প্রায় নিরজন হাটের অলিগলি দিয়ে পাক খেতে-খেতে যেন মাঠের পর মাঠ পেরিয়ে বস্তির দিকেই চলেছে। হতে পারে, এই অশ্বারোহী অন্ধ। হতে পারে, এই ঘোড়া অন্ধ। হতে পারে, এই ঘোড়া আর অশ্বারোহী দু-জনেই ঘুমিয়ে পড়েছে। কোনো এক সময়ে পথ পেয়ে যাবে - তারপর আকাশের পটভূমিতে নদীর চর ও অরণ্যের দূরত্বকে এই ঘোড়া আর তার আরোহী আদিগন্ত প্রান্তরের আলে-আলে কমিয়ে আনবে। আরোহী কখনো মিশে যাবে, কখনো ঘোড়াটির লম্বিত গলাটাই ঝুলে থাকবে, কখনো ঘাড়ের ভিতর গুঁজে যাওয়া মাথা নিয়ে আরোহীর ছায়াটুকু ভেসে থাকবে, কখনো ঘোড়ার পিছনটা একটা ভাঙা মেশিনের মত লাফাতে-লাফাতে যাবে - যেন কেউ টেনে নিয়ে যাচ্ছে, কখনো নদীর দুই পাড়ে ছায়া - মাঝখানের জলটুকুতে ওদের ছায়া, কখনো জলহীন নদীখাতটুকু যেন ঘোড়ার চারটি পায়ের ভঙ্গুরতা থেকে উজিয়ে গেছে, কখনো নদীর বাঁধের ওপর ছায়ায়-আলোয়, নদীর ভিতর-চরে বালিয়াড়ি ভেঙে, বা অরণ্যের কোনো গাছতলায়। এখন মধ্যরাত্রিতে এই শূন্য হাটে বোঝা যায় না, এই ঘোড়া ও তার আরোহীর কোথাও একটা অবতরণ আছে।"
_________________________
'শেষহাটি থেকে হাট শেষ'
"অন্ধকারটাই প্রধান। মাঝে-মাঝে আলর ছোঁয়া, আবার কোনো-কোনো ফাঁকফোকর দিয়ে দু-একবার দিগন্ত বা কোনো অন্যমনস্কতায় আকাশ চোখে পড়লে ব্যাপ্ত অন্ধকারটাই দেখা যায়। আলোর নানা বৃত্তেও শুধু উজ্জ্বলতা নয়। কোনো মদেশিয়া রমণীর পিঠে কাপড় দিয়ে বাঁধা বাচ্চার মাথা দোল খায়, ওপরেই জেগে থাকে লাল ও কিছু অস্পষ্ট রঙের বুনো ফুলের ঝাড়, কালো চুলে। কালো মুখ অন্ধকারের সঙ্গে কোন অনির্দিষ্ট পরিপ্রেক্ষিতে গিয়ে মেশে। নাইলনের উজ্জ্বলতা পিছলে যায় কোনো তাগড়া আদিবাসী বুক থেকে। ধনুকের একটা মাথা দেখা যায়। রাজবংশী রমণীর ফোতার ওপরে উঠে আসে নগ্ন হাত, গলা- কাঁধ। অন্ধকারে ঝিলিক দেয় কুচকুচে আদিবাসী রমণীর ঝকঝকে দাঁতের সারি। কোথাও নিষ্ঠুরতা ঘটে যেতে পারে। বটগাছের গুঁড়ির মত ভুয়োদর্শী মোঙ্গলয়েড মুখ চামড়ার অসংখ্য কুঞ্চনে নদীর চরের মত জেগে থাকে। কোথাও জমি চষা হয়ে গেছে। মেদহীন তীব্র পাহাড়ি চিবুকে পার্শ্বমুখের শান। টিলার মাথা থেকে সমতল দেখা যায়। এ হাটের বেচাকেনা শেষে এখন যেন ভিড়েরই মুখ - বহু শত বর্ষের আদিবাসী ঘরানার মুখোশে অলঙ্কৃত সে-মুখময় শুধু বিস্ময় বা বিস্ময়ের অবসান। রেখা, রঙ আর অঙ্গসংস্থানে কোনো নতুনত্ব নেই, একটি মুখোশ থেকে আর-একটি মুখোশ আলাদা করা যায় না, অথচ প্রতিটি মুখোশই আলাদা হয়ে যায় অনিবার্য। এই দীর্ঘ-দীর্ঘ ছায়াসন্নিপাতে সেই মুখোশের ক্ষণিকতা অথচ তার বড় বেশি নির্দিষ্টতায় বিদ্যুচ্চমকিত অরণ্যের আভাস যেন খেলে-খেলে যায়। বা, কখনো, বিদ্যুচ্চমকের জন্য অরণ্যের অন্ধকার প্রতীক্ষা। সেই প্রতীক্ষাতেই নাচের গানে পাহাড়ের প্রতিধ্বনির ক্ষীণতা আসে। একাকী ঢোলে বোল ওঠে। কোন বিস্মৃত নির্ঝর বয়ে যায়। আর এই ভিড়, আর সওদা, আর কেনাবেচা, আর ভিড়, আর সওদার ভেতরে মিশে গিয়েও মিশতে পারে না, ভিড়ের হয়েও ভিড় থেকে যেতে পারে না, আরো একবার মেলায় এসেও যেন হারিয়ে যাওয়া আর ফিরে যাওয়ার মত বিষণ্ণ, আত্মবিস্মৃত, বিচ্ছিন্ন মুখ, মুখ, মুখের সারি। "
_____________
'এই হাটটা কেমন'
_____________
'এই হাটটা কেমন'
Subscribe to:
Posts (Atom)